গোকুল মেধ বগুড়া সদর থানাধীন গোকুল গ্রামে খননকৃত একটি প্রত্নস্থল। গোকুল গ্রামটি মহাস্থানগড় থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। প্রত্নস্থলটি এদেশের জনপ্রিয় লোকগাঁথার নায়ক-নায়িকা বেহুলা-লক্ষ্মিন্দরের বাসর ঘর বলে জনসাধারণের কাছে পরিচিত। এ স্থানটিকে লক্ষ্মিন্দরের মেধও বলা হয়ে থাকে। ১৯৩৪-৩৬ সালে এন.জি মজুমদার কর্তৃক উৎখননের ফলে এখানে একটি বিশাল মন্দিরের বা স্তূপের ভিত্তি উন্মোচিত হয়েছে। এ ভিত্তিটি স্তরে স্তরে উঁচু করে কুঠুরি নির্মাণ রীতিতে (terraced cellular style of construction) নির্মিত।
এখানে ১৭২টি কুঠুরি বিভিন্ন তলে মাটি দিয়ে ভরাট করে নিচ থেকে উপরের দিকে ক্রমহ্রাসমান করে এমন ভাবে সাজানো হয়েছিল যাতে এগুলি কোনো সুউচ্চ মন্দির বা স্তূপের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহূত হতে পারে। এ রূপ স্তরে স্ত্তরে উঁচু করা বহুতল বিশিষ্ট সমান্তরাল ঠেস দেওয়ালযুক্ত ভিতের উপর প্রকৃত স্থাপত্য নির্মাণ রীতি প্রাচীন বাংলাদেশের একটি তাৎপর্যপূর্ণ স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য। এ মন্দিরের সঙ্গে পরবর্তী গুপ্তযুগের (ছয়-সাত শতক) কতগুলি পোড়ামাটির ফলক পাওয়া গেছে। সেন যুগে (১১শ- ১২শ শতক) এখানে বারান্দাযুক্ত একটি বর্গাকৃতির মন্দির নির্মিত হয়েছিল। এ মন্দিরে বহু গর্তযুক্ত একটি ছোট প্রস্তর খন্ডের সঙ্গে ষাঁড়ের প্রতিকৃতি উৎকীর্ণ একটি সোনার পাত পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হয় যে, এটি একটি শীব মন্দির ছিলো। [মোঃ আইয়ুব খান]
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস